স্পোর্টস ডেস্ক: পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক বিসমাহ মারুফের সঙ্গে সর্বশেষ একাধিক টুর্নামেন্টে কোলের বয়সী মেয়ে ফাতিমাকে দেখা গিয়েছিল। যা ম্যাচ শেষে এক করে দিয়েছিল চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তানের ক্রিকেটারদেরও। এভাবে ছোট্ট ফাতিমাও হয়ে ওঠে ক্রিকেটের পরিচিত তারকা। ২০২২ এশিয়া কাপের আসরেও বাংলাদেশে মেয়েকে নিয়েই খেলতে এসেছিলেন বিসমাহ। তবে আসন্ন এশিয়ান গেমসে মেয়েকে নিয়ে যাওয়ার সেই সুযোগ নেই, তাই তো টুর্নামেন্টটি থেকে তিনি নিজের নাম প্রত্যাহার করে নিয়েছেন।
চীনের হাংঝুতে হতে যাওয়া এবারের গেমসের নিয়ম অনুযায়ী, অ্যাথলেটরা ভিলেজে সন্তানদের সঙ্গে নিতে পারবেন না। তাই তো ৩২ বছর বয়সী পাকিস্তানি ব্যাটার বিসমাহও এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন না। বিসমাহ ছাড়াও ধর্মীয় অনুশাসন পালনের তাগিদে মাত্র ১৮ বছর বয়সেই ক্রিকেট ছেড়েছেন দেশটির আরেক ব্যাটার আয়েশা নাসিম। সে কারণে প্রথমবারের মতো দলে ডাক পেয়েছেন আনুশা নাসির ও শাওয়াল জুলফিকার।
আসন্ন টুর্নামেন্টে বিসমাহর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে পিসিবি নারী ক্রিকেটের প্রধান তানিয়া মল্লিক বলেন, ‘বিধি-নিষেধের কারণে কন্যাশিশুকে গেমস ভিলেজে নিতে পারছে না—এমন কারণে এ ইভেন্টে বিসমাহ মারুফের সার্ভিস মিস করাটা দলের জন্য দুর্ভাগ্যজনক।’
বিসমাহ না থাকার বিষয়টি মানতে কষ্ট হচ্ছে অধিনায়ক নিদা দারের, ‘আয়োজকদের নিয়মের কারণে বিসমাহ মারুফ দলের সঙ্গে যোগ দিতে পারছে না, এটি শোনা কষ্টকর ছিল। অনেকদিন ধরে বিসমাহকে চিনি বলে আমি বুঝি, পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করা তার কাছে কতটা বিশাল ব্যাপার।’
তবে বিসমাহর অনুপস্থিতিতেও দলকে নিয়ে আশাবাদী পাক অধিনায়ক, ‘বড় মঞ্চে উৎকর্ষ সাধনের সুযোগ নিতে প্রস্তুত দারুণ মেধাবী ও নিবেদিত খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া দল আমাদের। আমাদের প্রত্যেকে সেরাটা দিতে ও এশিয়ান গেমসে পাকিস্তান নারী ক্রিকেটের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ।’
গত বছর নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে বিসমাহর মেয়ের সঙ্গে ভারতীয় ক্রিকেটারদের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। দ্বিপক্ষীয় সিরিজ বা আইসিসি টুর্নামেন্টে এমন কোনো নিয়ম না থাকলেও এশিয়ান গেমসের কড়াকড়ির কারণে এবার মেয়েকে সঙ্গে নিতে পারছেন না বিসমাহ। এর আগে বার্মিংহামে কমনওয়েলথ গেমসেও ভিলেজে মেয়েকে নিতে পারেননি তিনি। সেবার অবশ্য মেয়ে ও মাকে আলাদা করে ভিলেজের বাইরে হোটেলে রেখেছিলেন বিসমাহ।
বিহমাহ যখন মাঠের খেলায় ব্যস্ত থাকেন, তখন ফাতিমাকে দেখভাল করেন তার নানী। ছোট্ট শিশুর সুবিধার্থে বিসমাহর মা-ও টুর্নামেন্টগুলোতে তার সফরসঙ্গী হন। এই পুরো ব্যাপারেই থাকে পাকিস্তান গোটা দলের দারুণ সহযোগিতা ও সমর্থন। তবে এবার আর সেরকমটা হলো না।
এর আগে ২০১৪ সালে ইনচন ও ২০১০ সালে গুয়াংঝুতে সোনা জিতেছিল পাকিস্তান নারী ক্রিকেট দল। এবারের আসরে ক্রিকেট ইভেন্ট অনুষ্ঠিত হবে ১৯ থেকে ২৬ সেপ্টেম্বর। টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী, আইসিসি টি-টোয়েন্টি র্যাংকিংয়ের অবস্থান অনুযায়ী সরাসরি কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে খেলবে পাকিস্তান। যে ম্যাচগুলো হবে ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বরের মধ্যে। ২৫ সেপ্টেম্বর হবে সেমিফাইনাল, ফাইনাল ২৬ সেপ্টেম্বর। ব্রোঞ্জ ম্যাচও হবে ২৬ তারিখেই। যেখানে অংশ নেবে বাংলাদেশও।